নেট দুনিয়া কাপাতে আসছে ‘বলি’ তাই ফাইটিং শিখেছেন পলাশ, রক্তও ঝরিয়েছেন
- নেট দুনিয়া কাপাতে আসছে ‘বলি’ তাই ফাইটিং শিখেছেন পলাশ, রক্তও ঝরিয়েছেন
তকদীর, মহানগর দিয়ে আলোচনায় এসেছে ‘হইচই বাংলাদেশ’। জনপ্রিয় এই ওটিটি প্লাটফর্মের উদ্যোগে নির্মিত নতুন ওয়েব সিরিজ ‘বলি’ আসছে ডিসেম্বরে। বিজ্ঞাপন বানিয়ে হাত পাকানো নির্মাতা শংখ দাশগুপ্তের পরিচালনায় এতে অভিনয় করেন চঞ্চল চৌধুরী, জিয়াউল হক পলাশ, সোহানা সাবা, সাফা কবির, সোহেল মণ্ডল, মৌসুমি মৌ, ইরেশ যাকের, লুৎফুর রহমান জর্জ, সালাউদ্দিন লাভলুসহ অনেকে।
কদিন আগে ‘বলি’র প্রথম টিজার ও পোস্টার প্রকাশের পর নজর কেড়েছে। সবকিছু ছাপিয়ে অন্যরকমভাবে লুক নিয়ে আলোচনা হচ্ছে কাজল আরেফিন অমি’র ‘ব্যালেচর পয়েন্ট’ নাটকের কাবিলা খ্যাত পলাশের। গোঁফসহ পোড় খাওয়া চেহারায় পলাশের এই লুক ও চরিত্রটি আগ্রহের শীর্ষে দর্শকের।
চ্যানেল আই অনলাইনের সঙ্গে আলাপকালে সিরিজটিতে যুক্ত হওয়া, চরিত্র ও কাজের অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন পলাশ…
‘বলি’তে যুক্ত হলেন যেভাবে…
পরিচালক শংখ দা ফোন করে সিরিজটির ব্যাপারে কথার বলার জন্য ডাকেন। তার অফিসে যাওয়ার পরে পুরো গল্পটা আমাকে শোনান। কিন্তু আমার জন্য কোন চরিত্র শুরুতে বলেননি। গল্প শোনার পর সবগুলো চরিত্রের মধ্যে নিজাম চরিত্র আমার কাছে অন্যরকম (খাতারনাগ) লাগে। পরে দাদা জানান, আমার চরিত্রটি হচ্ছে নিজাম। তখন আমার মনে হয়েছিল, আগে যেসব চরিত্র করেছি সবগুলো থেকে নিজাম একেবারেই আলাদা। তখন দাদাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, এই চরিত্রটির জন্য আমাকে কেন ভাবলেন? উনি বলেছিলেন, পলাশের ভেতরের আরেকটা অভিনেতা পলাশ রয়েছে। সেই রিয়েল পলাশকে বের করতে চাই।
বিজ্ঞাপন
নিজামের ভিন্নরকম লুক…
লুক নিয়ে কিছুদিন ধরে পর্যালোচনা করা হয়। মেকাপ আর্টিস্ট সেতু আপু এবং পরিচালক শংখ দা মিলে আমার একটা লুক বের করেন। সেখানে আমিও কিছু ইনপুট দেই। শুরুতে হইচই থেকে বলা ছিল কোনোভাবেই লুক প্রকাশ করা যাবে না। লুক সেটের তিন সপ্তাহ পরে শুটিং শুরু হয়েছিল। মাঝের কয়েকটি দিন আমাকে মুখ ঢেকে, ক্যাপ পরে চলাফেরা করতে বেশ কষ্ট হয়েছে। স্ক্রিনে যে পলাশ আসবে সে খুবই অচেনা মানুষ। যাকে কেউ চেনে না। চরিত্রের সঙ্গে মিশে যেতে আমার সময় লেগেছে। নিজাম খুব রুথলেস। ক্ষমতাধর ব্যক্তির সঙ্গে বসবাস করে। অনেক গিমিক রয়েছে।
চরিত্রটির জন্য ফাইটিং শেখা…
এই শুটিংয়ের জন্য অ্যাডওয়ার্ড ভাইয়ের কাছ থেকে দুই সপ্তাহ ধরে ফাইট শিখেছি। প্রতিদিন সকালে খিলক্ষেত গিয়ে ফাইট শিখতাম। অ্যাডওয়ার্ড ভাই আমাকে খুব যত্ন নিয়ে ফাইট শিখিয়েছে। এজন্য তার কাছে কৃতজ্ঞ। এর বাইরে মেকাপ, কস্টিউম থেকে ইউনিটের প্রত্যেকেই তাদের জায়গায় খুবই জোশ। আরেকটি মানুষের কথা স্পেশাল ভাবে বলতে চাই, তিনি চঞ্চল ভাই। পুরো শুটিংয়ে উনি আমার শিক্ষকের মতো ছিলেন। এটা আমি কখনই ভুলবো না। ওনার সঙ্গে দৃশ্য হওয়ার পর বলতেন, শুধু একা আমি করলে হবে না। সবাইকে ভালো করতে হবে। এই কথায় ভীষণ অনুপ্রেরণা পেয়েছি। নাসিরউদ্দিন ভাই, ইরেশ যাকের ভাই, সাফা কবির প্রত্যেকেই সহযোগিতা করেছেন নইলে পায়ে ক্ষত থাকার পরে সুন্দরভাবে কাজটি শেষ করতে পারতাম না।
শুটিং অভিজ্ঞতা…
কুয়াকাটা-মানিকগঞ্জ সবমিলে আমি ২৪ দিন শুটিং করেছি। এমন জায়গায় শুটিং করেছি সেখানে কুয়াকাটা থেকে বাইকে করে যেতে সময় লাগতো দুই ঘণ্টা। সারাদিন রোদের মধ্যে শুটিং হতো। প্রথমদিন শুটিং করতে গিয়ে আমাকে যে জুতা পরানো হয়েছিল পা ছিলে যায়। এরপর থেকে সকালে উঠে দুই পায়ে ব্যান্ডেজ করে মোজা পরে তারপর জুতা (বুট) পরতাম। এমন অবস্থা হয় পা গর্ত হয়ে যায়। ঘুম থেকে উঠে দেখি বিছানা রক্তে ভিজে গেছে। সেখানে ভালো ডাক্তার ছিল না। আমার ছিল ডার্ক মেকাপ। শুটিং থেকে ফিরে হাত গলা মুখ সবখান থেকে মেকাপ তুলতেই ঘণ্টা খানেক লেগে যেতো। সকাল সাতটায় হোটেলের নিচে বাইক আসতো ৭০-৮০টা। আর্টিস্টরা সবাই বাইকে করে যেতাম। ক্যামেরা একেকজন নিয়ে যেতো। ভোর রাতে লাইট নিয়ে যেতো ভ্যানে করে। ওইখানে শুটিং করা আমার জন্য এক্সট্রিম লেভেলের অভিজ্ঞতা। শংখ দাদার পুরো টিম খুব গোছানো। নইলে ১৬০জন নিয়ে কুয়াকাটার মতো জায়গায় শুটিং করা সম্ভব ছিল না। যেটা শংখ দাদার স্ক্রিনে দরকার সেটা উনি করেই ছাড়েন।
কোন মন্তব্য নেই